বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালীতে বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ার ও তীব্র স্রোতের কারণে একটি গ্রাম রক্ষা বাঁধ ভেঙে অন্তত তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে সাড়ে তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মধ্য চালিতাবুনিয়া গ্রামের একটি বাঁধ ভেঙে যায়। এতে মধ্য চালিতাবুনিয়া, কোড়ালিয়া ও নয়ারচর গ্রাম প্লাবিত হয়। হঠাৎ করে জোয়ারের পানিতে তীব্র স্রোতের কারণে বাঁধটি ধসে পড়ে বলে জানা গেছে।
প্লাবিত এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বাঁধ ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও খেতের ফসল পড়েছে হুমকির মুখে। এতে চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
মধ্য চালিতাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ মিয়া বলেন, "বাঁধ ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে পানি ঢুকে পড়ে। কোনোমতে পরিবার নিয়ে ঘরের উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছি। গরু-ছাগল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।"
কোড়ালিয়া এলাকার জাহানারা বেগম বলেন, "রাতের বেলা হঠাৎ পানি উঠতে থাকে। ছোট ছোট বাচ্চারা ভয় পেয়ে কান্না শুরু করে। এখন তো রান্না-বান্না দূরের কথা, শুকনো জায়গাও নেই।"
নয়ারচরের কৃষক আবদুর রহমান সিকদার বলেন, "এখনো অনেকের ধান কাটা হয়নি। হঠাৎ পানি উঠে সব ডুবে গেছে। আমরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি।"
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান বলেন, "আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। ইতোমধ্যে তিনটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার তথ্য পেয়েছি। এছাড়া যারা গ্রাম রক্ষা বাঁধের বাইরে ছিলেন তারাও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি এবং সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।"
উল্লেখ্য, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে এমন দুর্যোগ প্রায়শই দেখা দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই গ্রাম রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।